জাগ্রতদের মধ্যে ঘুমন্ত কে?
ঘুমন্তদের মধ্যে জাগ্রত কে?
কে এটা জানে? কে এটা বলতে পারে?
এই প্রশ্নটা করেছিল এক বৃক্ষদেবতা। তার উত্তরে আপনারা অনেকেই অনেক উত্তর দিয়েছেন। তবে শুনে নিন হিমালয়ের এক ঋষির উত্তর।
সেই ঋষি হিমালয়ের পাদদেশে তপস্যা করত। সে কেবল দাঁড়িয়ে ও হাঁটাহাঁটি করে দিন যাপন করত। রাতেও না ঘুমিয়ে সারারাত হাঁটাহাঁটি করে কাটিয়ে দিত। তার এমন কঠোর জীবনযাপন দেখে এক বৃক্ষদেবতা তার প্রতি খুশি হয়ে গাছের ডালে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করল,
জাগ্রতদের মধ্যে ঘুমন্ত কে?
ঘুমন্তদের মধ্যে জাগ্রত কে?
কে এটা জানে? কে এটা বলতে পারে?
ঋষি তাকে বলল,
আমি জাগ্রতদের মধ্যে ঘুমন্ত।
আমি ঘুমন্তদের মধ্যে জাগ্রত।
আমিই এটা জানি।
আমিই এটা বলতে পারি।
বৃক্ষদেবতা জিজ্ঞেস করল,
কীভাবে জাগ্রতদের মধ্যে ঘুমন্ত হয়?
কীভাবে ঘুমন্তদের মধ্যে জাগ্রত হয়?
কীভাবে সেটা জান? কীভাবে সেটা বলবে আমায়?
ঋষি তার উত্তরে বলল,
নির্বাণধর্মকে যে জানে না,
সংযম ও ইন্দ্রিয়দমনকে জানে না।
তারাই হচ্ছে ঘুমন্ত।
তাদের মাঝে আমি একা জেগে থাকি।
যাদের লোভ, বিদ্বেষ ও অজ্ঞানতা পরিত্যক্ত হয়েছে,
তারা জেগে আছে।
তাদের মাঝে আমি এখনো ঘুমিয়ে আছি।
এভাবে জাগ্রতদের মধ্যে ঘুমন্ত,
এভাবেই ঘুমন্তদের মধ্যে জাগ্রত,
এভাবেই আমি এটাকে জানি।
এভাবেই আমি এটা বলতে পারি।
তা শুনে সেই বৃক্ষদেবতা ঋষিকে সাধুবাদ দিয়ে নিজের দিব্যবিমানে প্রবেশ করল।
রেফারেন্স:
জাতক-অট্ঠকথা-৩=>৭. সত্তকনিপাতো => [৪১৪] ৯. জাগরজাতকৰণ্ণনা