পরিত্রাণ সুত্র শ্রবণ অনুষ্ঠান বৌদ্ধদের মধ্যে প্রচলিত একটি বিষয়। অতি প্রাচীনকাল থেকে বৌদ্ধভিক্ষুরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পরিত্রাণ সুত্র আবৃত্তি করে আসছে। উদাহরণস্বরূপ বুদ্ধ বৈশালীতে রতনসুত্র দেশনা করে সমস্ত অন্তরায় উপদ্রব দূর করে দিয়েছিলেন। আয়ুবর্ধন কুমারের মৃত্যুদশা দূর করার জন্য সাতদিন ধরে পরিত্রাণ সুত্র শ্রবণের উপদেশ দিয়েছিলেন। এভাবে বুদ্ধের জীবদ্দশাতেই আমরা অনেকবার পরিত্রাণ সুত্রের প্রচলন দেখতে পাই। একজন ভিক্ষু হিসেবে চলতে হলে কমপক্ষে এই পরিত্রাণ সুত্রগুলো মুখস্থ করতে হয়। পালিতে এর নাম হচ্ছে ‘চতুভাণৰার’। আমি এখানে হাজার বছরের পুরনো সেই অরিজিনাল পরিত্রাণ সুত্রগুলোর তালিকা দিলাম।
১. আরাধনা বা পরিত্রাণ প্রার্থনা
২. সরণগমন
৩. দশ শিক্ষাপদ
৪. কুমার প্রশ্ন
৫. বত্রিশ অশুচি (দ্বত্তিংসাকার)
৬. প্রত্যবেক্ষণ (পচ্চৰেক্খণা)
সুত্র
৭. দশধর্ম সুত্র
৮. মঙ্গল সুত্র
৯. রতন সুত্র
১০. করণীয় মৈত্রী সুত্র
১১. খন্ধ পরিত্রাণ
১২. মেত্তানিসংস সুত্র
১৩. মিত্তানিসংস সুত্র
১৪. মোর পরিত্রাণ
১৫. চন্দ পরিত্রাণ
১৬. সুরিয পরিত্রাণ
১৭. ধজগ্গ পরিত্রাণ
১৮. মহাকস্সপ থের বোজ্ঝঙ্গ
১৯. মহামোগ্গল্লানথের বোজ্ঝঙ্গ
২০. মহাচুন্দ থের বোজ্ঝঙ্গ
২১. গিরিমানন্দ সুত্র
২২. ইসিগিলি সুত্র
২৩. ধম্মচক্কপৰত্তন সুত্র
২৪. মহাসময় সুত্র
২৫. আলৰক সুত্র
২৬. কসীভারদ্বাজ সুত্র
২৭. পরাভৰ সুত্র
২৮. ৰসল সুত্র
২৯. সচ্চৰিভঙ্গ সুত্র
৩০. আটানাটিয সুত্র
এছাড়া বোজ্ঝঙ্গ পরিত্রাণ, জয়মঙ্গল অট্ঠগাথা বা মহাজয়মঙ্গলগাথাগুলো ত্রিপিটকের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই সেগুলো আবৃত্তি করা যায়।
কিন্তু চক্ক পরিত্রাণ, ছদিসাপাল সুত্র, ধারণ পরিত্রাণ ইত্যাদি সুত্রগুলো মারাত্মক রকমের ভুয়া। সেগুলোতে আবার দাবি করা হয়েছে সেগুলো নাকি বুদ্ধ নিজেই দেশনা করেছেন! অথচ ত্রিপিটকে সেগুলোর নামগন্ধও নেই। বুঝুন অবস্থা। আমাদের এসমস্ত ভেজাল সুত্রগুলো থেকে দূরে থেকে বুদ্ধের খাঁটি সুত্রগুলোকেই গুরুত্ব দেয়া উচিত।