বর্তমানে অনেকেই প্রশ্ন করে, প্রকৃত উপাসক উপাসিকা কাদেরকে বলা যাবে? বুদ্ধ অঙ্গুত্তর নিকায়ের চণ্ডাল সুত্রে (অঙ্গুত্তর নিকায়.৫.১৭৫) বলেছেন, যে শ্রদ্ধাহীন হয়, দুঃশীল হয়, মিথ্যাবিষয়ে কৌতুহলী হয়, কুশলকর্মের দিকে খেয়াল না করে মঙ্গল নিয়ে কৌতুহলী হয় (অর্থাৎ মঙ্গলসুত্রের আটত্রিশ প্রকার মঙ্গলের দিকে মন না দিয়ে সাধারণ লোকজনের মতোই সেও ভাবে, গরু দেখলে মঙ্গল, কাক দেখলে অমঙ্গল, সাপ দেখলে অমঙ্গল। সে এভাবে কুসংস্কারগুলোর মাঝে মঙ্গল অমঙ্গল খুঁজে বেড়ায়), বুদ্ধশাসনের বাইরে অন্যধর্মের মধ্যে দানের পাত্র খুঁজে বেড়ায় (অর্থাৎ সে ভাবে, ভিক্ষুসঙ্ঘ দেখছি ঠিক পথে নেই। এর চেয়ে বরং অন্যধর্ম ভালো। এই ভেবে সে তখন অন্যধর্মের গুরুদেরকে দান দেয়, তাদের সেবা করে, তাদের উপদেশ অনুসরণ করে)। এমন উপাসক হয় ত্রিরত্নের জন্য নিকৃষ্ট উপাসক।
কে উৎকৃষ্ট উপাসক হয়? কে প্রকৃত উপাসক হয়? বুদ্ধ বলেছেন, যে শ্রদ্ধাবান হয়, শীলবান হয়, মিথ্যাবিষয়ে কৌতুহলী হয় না, সাধারণ লোকজনের মতো মঙ্গল অমঙ্গল নিয়ে কৌতুহলী হয় না (অর্থাৎ সে মঙ্গলসুত্রের আটত্রিশ প্রকার মঙ্গলের দিকেই মন দেয়। সাধারণ লোকজনের মতো সে ‘গরু দেখলে মঙ্গল, কাক দেখলে অমঙ্গল, সাপ দেখলে অমঙ্গল’ এভাবে কুসংস্কারগুলোর মাঝে মঙ্গল অমঙ্গল খুঁজে বেড়ায় না), বুদ্ধশাসনের বাইরে অন্যধর্মের মধ্যে দানের পাত্র খুঁজে বেড়ায় না। এমন উপাসক হয় ত্রিরত্নের জন্য উৎকৃষ্ট উপাসক। তাকে বলা হয় উপাসকরত্ন, অথবা উপাসকপদ্ম। (অঙ্গুত্তর নিকায়.৫.১৭৫)
এছাড়াও মিলিন্দ প্রশ্নে নাগসেন ভান্তে বলেছিলেন, উপাসকের দশটি গুণ। সে সঙ্ঘের সুখে সুখী হয়, সঙ্ঘের দুঃখে দুঃখী হয়। সে ধর্মকে আগে গুরুত্ব দিয়েই সবকিছু করে। সে সামর্থ্য অনুযায়ী দান করে। বুদ্ধশাসনের অধঃপতন দেখে তার উন্নতির চেষ্টা চালায়। সম্যকদৃষ্টি সম্পন্ন হয়। সাধারণ লোকজনের মতো মঙ্গল অমঙ্গল নিয়ে কৌতুহলী হয় না। জীবন গেলেও অন্য ধর্মের গুরুর আশ্রয় গ্রহণ করে না। কায়িক ও বাচনিক শীল রক্ষা করে চলে। একতাতে আনন্দিত হয়। ঈর্ষাপরায়ণ হয় না। ভণ্ডামি বা লোক দেখানোর জন্য বুদ্ধশাসনের কাজ করে না। বুদ্ধের শরণ নেয়, ধর্মের শরণ নেয়, সঙ্ঘের শরণ নেয়। এই গুণগুলো কারো মধ্যে থাকলে তবেই সে হয় প্রকৃত উপাসক।
শ্রদ্ধাবান উপাসক উপাসিকাদের জন্য এই লেখা তুলে ধরা হলো।